সুরমা নদীর তীরে ক্বীন ব্রিজের পাশে আলী আমজদের ঘড়ি সংযুক্ত ঘরের অবস্থান। ঊনবিংশ শতকে নির্মিত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এটি। সিলেটের কুলাউড়ার পৃত্থিমপাশার জমিদার আলী আহমদ খান ১৮৭৪ সালে এই ঐতিহাসিক ঘড়িঘর নির্মাণ করেন।
আলী আহমদ খানের ছেলে আলী আমজদের নামানুসারে ঘড়িঘরটির নামকরণ করা হয়। স্থাপনের কিছুদিনের মধ্যেই এই ঘড়ি বেশ পরিচিতি লাভ করে।
লোহার খুঁটির উপর ঢেউটিন দিয়ে তৈরি বিশালাকার গম্বুজাকৃতির আলী আমজদের ঘড়ি ঘরের উচ্চতা ২৬ ফুট। আর দৈর্ঘ্য ৯ ফুট ৮ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ৮ ফুট ১০ ইঞ্চি।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে প্রাচীন এই ঘড়িঘরটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এর পর বিভিন্ন সময়ে ঘড়িটি সংস্কার করা হয়।
সর্বশেষ ২০১১ সালে সিলেট সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক মেরামতের ফলে আলী আমজদের ঘড়িটি এখনো চালু আছে।
Writer: Jebunnahar Joni
কিভাবে যাবেন
সিলেট শহরের যে কোনো স্থান থেকে সিএনজি, রিকশা বা অটোরিকশা দিয়ে সহজেই ক্বীন ব্রিজ সংলগ্ন আলী আমজদের ঘড়ি দেখতে যাওয়া যায়।
সিলেট রেলওয়ে স্টেশন ও কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল হতে আলী আমজদের ঘড়ির স্থানের দূরত্ব ১ কিলোমিটারের কাছাকাছি।
চাইলে পায়ে হেটে ক্বীন ব্রীজ হয়ে আলী আমজদের ঘড়ি দেখতে যেতে পারবেন।
ঢাকা-সিলেট, বাস : ঢাকা থেকে সড়ক পথে আলী আমজদের ঘড়িঘরের দূরত্ব প্রায় ২৪৬ কিলোমিটার এবং রেলপথে দূরত্ব প্রায় ৩১৯ কিলোমিটার।
ঢাকার গাবতলী এবং সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে সিলেটের বাস ছেড়ে যায়৷
ফকিরাপুল, সায়দাবাদ ও মহাখালী বাস স্টেশন থেকে গ্রিন লাইন, সৌদিয়া, এস আলম, শ্যামলি ও এনা পরিবহনের এসি বাস যাতায়াত করে।
এসব বাসের ভাড়া সাধারণত ৮০০ থেকে ১১০০ টাকার মধ্যে।
এ ছাড়া ঢাকা থেকে সিলেট যেতে শ্যামলী, হানিফ, ইউনিক, এনা পরিবহনের নন এসি বাসের ভাড়া জনপ্রতি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা।
ঢাকা-সিলেট, ট্রেন : ঢাকার কমলাপুর কিংবা বিমান বন্দর রেলওয়ে স্টেশন হতে উপবন, জয়ন্তিকা, পারাবত অথবা কালনী এক্সপ্রেসে সিলেট যেতে পারবেন।
ঢাকা-সিলেট, প্লেন : এ ছাড়া ঢাকা থেকে সবচেয়ে দ্রুত সময়ে ও স্বাচ্ছন্দ্যে সিলেট যেতে চাইলে আকাশ পথেও গমন করতে পারেন।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ, নভোএয়ার এবং ইউএস বাংলা বেছে নিতে পারেন। তিনটি বিমানই নিয়মিতভাবে সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
চট্টগ্রাম-সিলেট
চট্টগ্রাম থেকেও বাস, ট্রেন ও আকাশপথে সিলেট যাওয়া যায়। ট্রেনে যেতে পাহাড়িকা এবং উদয়ন এক্সপ্রেস, এ-দুটি ট্রেন সপ্তাহে ৬ দিন চলাচল করে।
কোথায় থাকবেন
সিলেট শহরের কদমতলী ও দরগা রোডে কম ভাড়ায় অনেক মানসম্মত আবাসিক হোটেল আছে৷ যেখানে ৪০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিভিন্ন ধরনের রুম পাবেন।
এ ছাড়া হোটেল হিল টাউন, গুলশান, দরগা গেইট, সুরমা, কায়কোবাদ ইত্যাদি হোটেলে আপনার প্রয়োজন ও সামর্থানুযায়ী থাকতে পারবেন।
কোথায় খাবেন
সিলেটের জিন্দাবাজার এলাকার পানসী, পাঁচ ভাই কিংবা পালকি রেস্টুরেন্টে কম খরচে নানা রকম দেশীয় খাবার খেতে পারেন।
এসব রেস্টুরেন্টের বাহারি খাবার ভ্রমণপিপাসুদের অন্যতম আকর্ষণ। এ ছাড়া শহরে বিভিন্ন মানের রেস্টুরেন্ট আছে, আপনার পছন্দ মতো যে কোনো জায়গায় খেয়ে নিতে পারেন।
সিলেট জেলার আরো কিছু দর্শনীয় স্থান
সিলেট শহর ও এর আশপাশে আরো যে সকল স্থানে ভ্রমণ করতে পারেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য—
হযরত শাহজালালের মাজার, হযরত শাহপরাণের মাজার, ক্বীন ব্রীজ, মালনীছড়া চা বাগান, জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, লোভাছড়া, লালাখাল,
পান্থুমাই ঝর্ণা, সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা, হাকালুকি হাওর, ভোলাগঞ্জ, ড্রিমল্যান্ড পার্ক, জাকারিয়া সিটি ইত্যাদি।
—জেবুননাহার জনি
সংশ্লিষ্ট আরো লেখা...
ক্বীন ব্রীজ