প্রদীপ মিত্রের দুটি কবিতা
প্রদীপ মিত্রের দুটি কবিতা
হৃদয়ের নাদ
বিশাল সত্তার ভেতর কী তুমুল আনন্দ; কী তুমুল জাগরণ; কী তমুল শুদ্ধতার অনন্য তরঙ্গ;
কী বাহুমেলা ডাক বিশ্ববোধের আততী জড়ানো হাতের অনন্ত উদ্ভাস যেন মনে হয় পৃথিবীর
দরোজা-জানালা এক ধাক্কায় কে যেন খুলে দিলো আজ। আজ ভোরে কে যেন দরাজকণ্ঠে
গেয়ে গেয়ে শোনালেন ভোররাঙা ভোরবেলাকার গান। কতদিন পরে এমন সুরের রণনে
রণনে যেন হলো মোহভঙ্গ। কী যে ভালোলাগা; কী যে ভালোবাসা। কী অবাক করা কাণ্ড
যেন মাথার উপর থেকে অকস্মাৎ ধেই ধেই করে নেমে গেল ষণ্ডাকাল। আমার আকাশভরা
চাঁদ, চাঁদ; নিরন্তর শুভবোধের সভ্যতা করতলে উদ্ভাসিত; আমি সদাশয় দাসের মতোন
পদতলে বসে তার সেবায় নিজেকে সঁপেছি সামান্য; প্রশ্নহীন অন্তর আমার;—এমন আলোর
রেখার সাম্যতায় আর কী কিছু প্রশ্নও করা যায়? প্রশ্ন! সে তো শুধু শুধু ধূ ধু আকাশের
বুকে ওড়ে চলা গতিহীনা ছিন্ন-চিহ্ন মেঘেদের পালছেঁড়া খণ্ডচিহ্ন হৃদয়ের নাদ।
প্রদীপ মিত্রের দুটি কবিতা
সার্বভৌমশক্তি রচনার অনুপাত
এশীয় সমাজের ধারণার কথা বলছি। এর মধ্যে একটি রাজনৈতিক ছক প্রচ্ছন্ন আছে;
এশীয় সমাজের মূল বৈশিষ্ট্যই হলো একটি স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের অস্তিত্ব, যে সরকার
কেন্দ্রীয়ভাবে আমলাতন্ত্রের মাধ্যমে সরকার পরিচালনা করে।
.
টম বটোমোর শষ্পশ্যাম কুরুক্ষেত্রে অবিচল নিত্যের সমাধি—‘সুধীন দত্তের পঙক্তির
বিপরীত রং বর্ণ ঙ পশ্চাত্তালুজাত নাসিক্য ব্যঞ্জনধ্বনি পূর্ববঙ্গ যেন হলন্তযুক্ত ঙ বর্ণ
কর আর কয়েদির সম্পর্কের সমান তালের হাট। ওষ্ঠে-পিষ্ঠে খুব কাঁপে ভিন্নশীত;
রণভঙ্গ দিয়া পলায়ন করিল ইংরেজ বটে’ কিন্তু লাহোর-করাচি হলো এক কর্ণ…
.
গো-মক্ষির কামড়ের চোটে গরু যায় গো-ভাগাড়ে। শোষণের নতুন কৌশল পশ্চিমার।
বিদ্রোহের ফাগুন-আগুনলাগা রোদে বায়ে রোদে তেতে ওঠে ভাঙ্গি আয়ুবের লৌহদাঁত;
নখের ডগায় শেখ মুজিবের স্পষ্টদানা হার না-মানার ছয় দফা; আগরতলার
দন্ত এক ধাক্কায় উপড়ে, আমরা গ্রহণ করি সার্বভৌমশক্তি রচনার অনুপাত…
.
চৌচাপটে কাজ সেরে ফেলা দরকার,—এমন নীতির সূক্ষ্ম আভায় বাঙলা হংসবেদী
ধুনোরির হাতে তুলা যেমন হাসে ও কাঁদে তেমন নৌকার স্রোতভাঙ্গা বৈঠা ব্যূহভেদী
রীতি মেনে যথারীতি স্বাধীনতার সংগ্রামীগীতি গাইলেন : ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো…
…………………
পড়ুন
কবিতা
৫ thoughts on “প্রদীপ মিত্রের দুটি কবিতা”