Sahittya

Literature magazine | Bangla & english worldwide

Fish

মাছ

মাছ

সুনীল শর্মাচার্য

.

মাঝরাতেই নরেন মালো খ্যাপলা জাল কাঁধে তুলে পদ্মদিঘির বিলে মাছ ধরতে যায়। আগে আগে না-গেলে মাছ পাওয়া যায় না। অন্য কেউ পদ্মদিঘির বিলে মাছের ডেরায় জাল ফেললে ওর ভাগ্যে তখন কিছুই জুটবে না।

এমন দিনকাল পড়েছে যে মাঝরাত থেকে জাল ফেলেও, তেমন মাছ জোটে না। আর মাছের দেখা না-মিললে অন্নও জোটে না। চারজনের পরিবার। বৃদ্ধ মা-বাবা আর নতুন বিয়ে করা বউ।

মাঝরাত থেকে ভোর অব্দি জাল ফেলে এক কেজি মাছও ধরতে পারে না। প্রকৃতির বিপর্যয়ে মাছের সংখ্যাও দিন দিন কমে আসছে। মাঠে কীটনাশক ওষুধ দেয় আর তাতেই পদ্মদিঘির বিলের মাছের বংশ লোপ। বিরিঞ্চি কাকা প্রায় বলে।

এক পায়ে পথ। রাত নিঝুম। কোথাও মুনিষ্যিজন নেই। কারো তো নরেনের মতো পেটের পুড়া নেই।

বউ বলছিল, আমারে একডা নাকচাবি দিবা। নরেন বউকে সোহাগ করতে করতে বলে, পদ্মদিঘির বিল দিলে তোকে একমাসেই নাকচাবি বানায়ে দেবানে। কিন্তু হয় না।

একটার পর একটা জিনিসের দাম যা বাড়ছে, তাতে একমুঠো ভাত জোটাতেই ও হিমসিম খাচ্ছে। পথ হাঁটতে হাঁটতে নরেন সংসার, বউ, এইসব ভাবছে। পদ্মদিঘির বিলের পাড়ে কখন পৌঁছে গেছে ও বুঝতেই পারেনি। ঝপঝপ জাল ফেলার শব্দে ওর চিন্তা ভাঙে।

মুখ থেকে আপনিই বেরিয়ে আসে—‘আজ আর মাছ পেতি হবেনি!’ ওদের পাড়ার ধনা জাল ফেলছে। বলল : হ্যানে জাল ফেলবিনে। অন্যদিকে যা।

মনের দুঃখে নরেন অন্যদিকে জাল ফেলে। কিন্তু মাছ কই? শুধু শাপলা পাতা আর নুড়ি। আশাহত হয় না ও। মাছ ওকে পেতেই হবে। নইলে যে সবাইকে উপোস দিতে হবে। দিন-আনা দিন-খাওয়া মানুষ ও।

মাছের আশায় নরেন জাল ফেলেই চলে—ঝপ ঝপ ঝপ…

…………………

পড়ুন

গল্প

উকিল ডাকাত : সুনীল শর্মাচার্য

এক সমাজবিরোধী ও টেলিফোনের গল্প : সুনীল শর্মাচার্য

আঁধার বদলায় : সুনীল শর্মাচার্য

অনুগল্প

মুকুন্দ

সাতটি মিনি গল্প

প্রচলিত এক শকুনির গল্প

ডাই পিঁপড়েচায়ের ঠেকে কয়েকজন

সম্পাদক

Jebunnahar Joni

জেবুননাহার জনি। Jebunnahar joni. কবি ও গল্পকার। জন্ম : ১১ জানুয়ারি, নারায়ণগঞ্জ; পৈতৃকনিবাস মাদারীপুর। পিতা : আতাউর রহমান হাওলাদার, মাতা : নুরুননাহার খান। সমাজকল্যাণে বিএ সম্মানসহ এমএ। পেশা : শিক্ষকতা। লেখার বিষয় : কবিতা ও গল্প। প্রকাশিত গ্রন্থ : মেঘলা রাতে চাঁদ (গল্প, ২০০৭), বিরান পথের কাশবন (কবিতা, ২০১৭)। পুরস্কার : গাংচিল সাহিত্য পুরস্কার (২০১১), সমধারা সাহিত্য পুরস্কার (২০১৫)।